দাম্পত্য
হিংসার চক্র

দাম্পত্য হিংসার চক্র একটি কুটিল চক্র, যা পর পর চারটি ধাপে আবর্তিত হতে দেখা যায়: উত্তেজনা তৈরি করা, মূল ঘটনা, আত্মপক্ষকে সমর্থন বা দোষখণ্ডন এবং শান্ত অবস্থা।

যখন এই ধাপগুলি পর পর ঘন ঘন তীব্রভাবে ঘটতে থাকে, নিয়ন্ত্রণকারী সঙ্গী সম্পর্কের ওপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে ফেলে। অস্থিরতা এবং বিভ্রান্তি মহিলা ভিকটিমদের মধ্যে সৃষ্ট হয় তাকে আক্রমণের শিকার হওয়া সত্ত্বেও এই সম্পর্ক চালিয়ে যেতে পরিচালিত করে।

উত্তেজনা সৃষ্টির ধাপ

চোখ রাঙিয়ে, একদম চুপ করে থেকে অথবা মেজাজ দেখিয়ে নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে। সে তখন অধৈর্য, অস্থির, অসহিষ্ণু এবং আক্রমণাত্মক ও মারমুখী হয়ে ওঠে।

এই পর্যায় নির্যাতিতা নারীর মধ্যে আতঙ্ক এবং উদ্বেগ তৈরি করে। উত্তেজনা কমাতে তিনি তখন তাঁর সঙ্গীর সমস্ত দাবি ও চাহিদা মেটাতে চেষ্টা করেন।

ঘটনা বা সংঘর্ষের ধাপ

নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি তার সঙ্গীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা, জোরজুলুম, আঘাত অথবা অপমান করার জন্য হিংসাকে ব্যবহার করে।

অপরজন এতে ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন এবং লজ্জা, ক্রোধ, অবিচার এবং দুঃখের অনুভূতিতে তাঁর মন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তিনি পালিয়ে গিয়ে বা কোনওভাবে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।

আত্মপক্ষকে সমর্থন বা দোষখণ্ডনের ধাপ

নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি তার নির্যাতনের জন্য আত্মপক্ষ সমর্থনে সঙ্গীর ওপরে দোষারোপ করে অথবা এর জন্য বাইরের কোনও ঘটনাকে দায়ী করে। নিজের কাজের গুরুত্ব ছোট করে দেখাতে সে নানা অজুহাত খুঁজে বের করে।

নির্যাতিতা নারী তাঁর সঙ্গীর আত্মপক্ষ সমর্থনের যুক্তিগুলো বিশ্বাস করার চেষ্টা করেনে এবং তার রাগ কমাতে চেষ্টা করেন। এমনকি তিনি নিজেকে এর জন্য দায়ী ভাবতেও শুরু করেন এবং মনে করেন তাঁর সঙ্গীর ব্যবহার পরিবর্তন হলে নির্যাতন, অত্যাচারও থেমে যাবে।

ঘটনা বা সংঘর্ষের ধাপ

নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি তার সঙ্গীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য, অবজ্ঞা, জোরজুলুম, আঘাত অথবা অপমান করার জন্য হিংসাকে ব্যবহার করে।

অপরজন এতে ভয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন এবং লজ্জা, ক্রোধ, অবিচার এবং দুঃখের অনুভূতিতে তাঁর মন আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তিনি পালিয়ে গিয়ে বা কোনওভাবে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেন।

শান্ত ধাপ

হিংসাত্মক নির্যাতন থেমে যায় পুরোপুরি। নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তিটি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সব কিছু করতে শুরু করে, সঙ্গী তাকে ক্ষমা করে দেয় এবং আবার সে তার সঙ্গীর বিশ্বাস অর্জন করে, সে ভীষণ সুন্দর ব্যবহার করতে থাকে, উপহার এনে দেয়, স্ত্রীকে প্রতিশ্রুতি দেয়, থেরাপি করানো নিয়ে কথাবার্তা বলে ইত্যাদি।

নির্যাতিতা নারী আশাবাদী হয়ে ওঠেন। তাঁর সঙ্গীর আচরণ পরিবর্তনে তিনি নিজের চেষ্টা সফল হচ্ছে বলে মনে করতে থাকেন এবং আবার সেই মানুষটির মধ্যে সেই পুরোনো মানুষটাকে খুঁজে পান, যাকে তিনি আগে ভালোবাসতেন। সঙ্গীকে তিনি সাহায্য করতে চান এবং নিজের আচরণেরও পরিবর্তন করতে চান যাতে এ-ধরনের ঘটনা না ঘটে।

এই পর্যায়টির সময়কাল দীর্ঘ হতে পারে। যতক্ষণ না ফের উত্তেজনা ফিরে আসছে, এই ধাপ চলবে। তারপর আবার চক্রটি শুরু হবে।

যদি আপনি নিজের নিরাপত্তা নিয়ে আতঙ্কে থাকেন, দ্বিধাহীনভাবে ৯১১
নম্বরে পুলিশে অথবা ৫১৪-৮৭৩-৯০১০ কিংবা ১-৮০০-৩৬৩-৯০১০ এই নম্বরে SOS ভায়োলেন্স কংজুগল-এ ফোন করুন।
এই পরিষেবা সবসময় চালু আছে।